সৌদি আরবের খেজুরের নার্সারি ও চারা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন শরীয়তপুরের সোলায়মান খান। চার বছরের ব্যবধানে এখন তার বার্ষিক আয় পাঁচ-সাত লাখ টাকা। কঠোর পরিশ্রমে এ সফলতা পেয়েছে সোলায়মানের পরিবার।
সরেজমিনে জানা যায়, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ছোটকাচনা গ্রামের খেজুর বাগানে সার্বক্ষণিক পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত থাকেন সোলায়মানসহ তার বাবা ও দুই ভাই। ভাগ্য ফেরাতে ইউটিউব ও ফেসবুকে ভিডিও দেখে এবং খেজুর বাগান পরিদর্শন করে ২০১৯ সালের মে মাসে বন্ধুদের মাধ্যমে প্রথমে সৌদি আরব থেকে বীজ আনেন সোলায়মান। পরে গাজীপুর, ময়মনসিংহ থেকেও সৌদি খেজুরের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পশ্চিম পাশের এক বিঘা জমিতে ২০টি চারাসহ বীজ রোপণ করেন। এতে তার খরচ হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। চার বছরের ব্যবধানে কয়েকটি গাছে এসেছে খেজুর। পুরো রঙ না এলেও আধপাকা লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের খেজুরগাছে ঝুলছে। বর্তমানে তিন বিঘা জমিতে প্রায় তিন হাজার গাছ ও চারা রয়েছে সোলায়মানের নার্সারিতে। তার নার্সারি থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ওপরে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় চারা বিক্রি হচ্ছে। তার নার্সারিতে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ টাকার চারা ও গাছ রয়েছে। অজপাড়াগাঁয়ের সোলায়মান এখন সফল উদ্যোক্তা। প্রতিদিন অনেকেই খেজুর বাগান দেখতে এসে তুলছেন ছবি ও সেলফি।
উদ্যোক্তা সোলায়মান খান বলেন, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে নিজের মতো করে গাছের পরিচর্যা করতে থাকি। পরে বাগান করতে সক্ষম হই। পাশাপাশি নার্সারিও করি। নার্সারিতে বিভিন্ন দামে খেজুর চারা বিক্রি হচ্ছে। ইচ্ছা ও পরিশ্রমই মানুষের ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে। উদ্যম নিয়ে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে গেলে সফলতা আসে।
সোলায়মানের বাবা দলিল উদ্দিন খান বলেন, ছেলেকে খেজুর বাগান করার জন্য জমি দিয়েছি। এখন সাফল্য এসেছে। খেজুর ও চারা বিক্রি করে আমাদের সংসার ভালোই চলে, আয়ও থাকে। আমি ও আমার আরও দুই ছেলে সোলায়মানকে সহযোগিতা করি।
স্থানীয় নতুন উদ্যোক্তা শাহ আলম মিয়া বলেন, সোলায়মানের কাছ থেকে চারা কিনে এনে আমি রোপণ করেছি। গাছে খেজুরও ধরেছে। খেজুর থেকে চারা তৈরি করেছি, বিক্রি করব ভাবছি।
সাহেদ আহমেদ, মনির হোসেনসহ দর্শনার্থীরা বলেন, সৌদি খেজুর বাগান করার ক্ষেত্রে সোলায়মান যে সফলতা দেখিয়েছেন এটা একটা সুন্দর নজির। তাই আমরা দেখতে এলাম, ছবি তুললাম। সোলায়মানের কাছ থেকে চারা কিনে রোপণ করার ইচ্ছে আছে।
নাগেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খান বলেন, সৌদি খেজুরের চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে সোলায়মান। আমাদের জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে লোক এসে তার নার্সারির খেজুরের চারা নিয়ে অনেকেই চাষাবাদ করছেন। সৌদি খেজুর চাষসহ তিনি কুল, লেবু ও আঙুরের চাষ করছেন। যারা বেকার রয়েছেন তারা ইচ্ছে করলে সোলায়মানের মতো উদ্যোক্তা হতে পারেন।
গোসাইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আমাদের উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে খেজুর বাগান সার্বিকভাবে দেখভাল করছি। পাশাপাশি রোগবালাই, সার ব্যবস্থাপনাসহ পরিচর্যার বিষয়ে সোলায়মানকে পরামর্শ দিচ্ছি।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS